সবেধন পুত্র মোর, আমার চেয়েও বেশি ঈশ্বরের তুই থেকে যা এখানে এই নাশপাতি গাছের বাগানে। সুপ্রচুর ফলভারে এইখানে গাছেরা আনত তৃপ্ত আর পরিমিত রঙের বাহারে উদ্ভাসিত; বার্ধক্যপীড়িত হয়ে তারা যেই কাঁদে, নোনাজল নয় কোনো, সুমধুর অলস সিরাপে অশ্রু ঝরে। “আমার নিজের আমি আর আমি থাকি না নিজের” তাকে দেখে মনে হতো বেগানা নাগর, চুপচাপ সে-বিদেশি,পদ্মডাঁটা হাতে নিয়ে এসেছিল আমার দুয়ারে; ঈশ্বরের জোড়াচক্ষু, ইউসুফেরও চোখের অধিক গনগনে তার চোখে চোখ রেখে কী হলো আমার আমি কী করে বোঝাই? ছিলাম নিজের আমি আর আমি থাকিনি নিজের। আর এই জনাবারো শ্রমশীল লোক, এরা কারা? তোর কথা মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝি না: শিখিয়েছি আমি তোকে বুলি; রেখেছি পাখির নামগুলি যে কোনো শিশুর মতো তুই দেখাতি ওদের যারা দীর্ঘ পরিযায়ী। ভিড় থেকে দূরে গিয়ে তুই ফের হয়ে যারে চুপ “আমার নিজের আমি আর আমি থাকি না নিজের” আমি যেই কথা বলি মুখভার কেন তোর বাপ? এই তোর মালামাল, চাকু ও করাত আর এই হাতুড়িটা বেঞ্চির ওপর। দিনে দিনে হয় মাপা এইখানে তোর এ-জীবন, মাপজোক নিয়ে তুই আসবাব বানাস যেমন; আর আমি পত্নী হেন তোকে দেবো পাঠ; আমার নিজের হবো আর হবো কেবলই আমার ইচ্ছেমতো যথাতথা বয়ে চলে বেয়াড়া বাতাস দিলখোশ না হলে কি কেউ চলে তার অনুরূপ? আজও মনে পড়ে, তুই গিয়েছিলি আলাপ জমাতে পশমের আলখাল্লাধারী যতো পণ্ডিতের সাথে। কানে এলো শহরের তীব্র হট্টগোল; এ-অশুভ যন্ত্রখানি কে বয়ে বেড়ায়? “সে তার নিজের আর নয় সে নিজের” মাড়িয়ে সবুজ আর দ্রুত-তৃণ গালিচা মাড়িয়ে দেখি এক আজগুবি ছায়া এসে পড়ে ও মানিক, এই পেটে তোকে আমি ধরেছি রে একা! ছিলো না নিকটে কোনো কবিরাজ নাড়ি কাটবার; ডাকবো না তোকে আমি প্রভু বলে ওরে সবেধন পুত্র মোর, দে আমায় সাড়া! “আমার নিজের আমি আর আমি নই তো নিজের।